জসিম মাহমুদ, টেকনাফ ::
প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন বগুড়ার মেয়ে মিতু আখতার। ৩ ঘণ্টা ৮ মিনিট ৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়ার গৌরব অর্জন করেন এই নারী সাঁতারু।
প্রয়াত কাজী হামিদুল হকের স্মরণে আজ বাংলা চ্যানেল সুইমিং-২০১৮ এর আয়োজন করা হয়। ফরচুন বাংলা চ্যানেল সুইমিংয়ের আয়োজনে এবারের এই প্রতিযোগিতায় ২৮ জন সাঁতারু অংশ নেন। এর মধ্য থেকে ১৮ জন সফলভাবে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন।
এবারের সাঁতারে ১৪ বছর বয়সী থেকে ৬৬ বছর বয়সী সাঁতারু অংশ নেন। এবার কয়েকটি রেকর্ড তৈরি হয়। গত ১৩ বছরে এইবারই প্রথমবারের মতো মাত্র ৩ ঘণ্টা ৮ মিনিট ৭ সেকেন্ডে ১৬.১ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে রেকর্ড তৈরি করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্র সাইফুল ইসলাম রাসেল (২২)।
এর আগে এই রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ী ভারতের রিতু কেডিয়া। তার সময় ছিল ৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিট।
এছাড়াও এবার বাংলাদেশের প্রথম এবং সর্বকনিষ্ঠ মহিলা হিসেবে এই চ্যানেল পাড়ি দেন বগুড়ার মোছা. মিতু আখতার (১৬), ৪ ঘণ্টা ৩২ মিনিট ৫১ সেকেন্ড সময় নেন তিনি। একই সাথে এই চ্যানেল পাড়ি দেন সর্বজ্যেষ্ঠ সদস্য ঢাকার ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান (৬৬), ৪ ঘণ্টা ৪২ মিনিট সময় নেন তিনি।
আরো যারা সফলভাবে পাড়ি দিয়েছেন, তারা হলেন- গত ১২ বছরে ১২ বার সফলভাবে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়া লিপটন সরকার (৪৯), ফজলুল কবির সিনা (৫৫), মনিরুজ্জামান (৪৮), সামসুজ্জামান আরাফাত (২৮), আবদুল্লাহ আল ইমরান (৩৭), সোহাগ বিশ্বাস (২৮), সাকিব আল হক (১৮), মো. রফিকুল ইসলাম (৩২), মো. লতিফুর রহমান (উৎসব সরকার) (১৯), আবদুল্লাহ আল রোমান (২৯), মাহবুবুর রহমান (২৪), এসআইএম ফেরদৌস আলম (৩৬), শংকর চন্দ্র বর্মণ (১৭), মো. মাজেদ মিয়া (১৬), রফিকুল ইসলাম (২০)।
উল্ল্যেখ্য, ২০০৬ সালের ১৪ জানুয়ারি বাংলা চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়। মূলত এটি টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ১৬.১ কিলোমিটার দীর্ঘ পানিপথ। এটির স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন প্রয়াত কাজী হামিদুল হক। যিনি নিজেও একজন বিখ্যাত আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফার ও স্কুবা ডাইভার এবং নানাবিধ অ্যাডভেঞ্চারের সাথে জড়িত ছিলেন। তাঁর তত্ত্বাবধানেই প্রথম বারের মতো ফজলুল কবির সিনা, লিপটন সরকার এবং সালমান সাঈদ ২০০৬ সালে ‘বাংলা চ্যানেল’ পাড়ি দেন। এরপর থেকে প্রতি বছরই এই আয়োজন করা হয়ে থাকে এবং ধীরে ধীরে এটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পায়।
সাঁতারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান কবির এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের সিনিয়র ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ আবদুল্লাহ আল মুহিন ।
এই আয়োজনে আরো স্পন্সর করেছে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, প্রিয় প্রাঙ্গণ ও অফরোড বাংলাদেশ। সিকিউরিটি পার্টনার ছিল এলিট ফোর্স। সবধরনের উদ্ধার কাজের দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। সহযোগী আয়োজক হিসেবে ছিল বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, ষড়জ, উডপেকার এই আয়োজনের পার্টনার।
পাঠকের মতামত: